বান্দরবানে উৎসব উদযাপনে ব্যাপক কর্মসূচি

————–
শৈহ্লাচিং মার্মা
রুমা (বান্দরবান) প্রতিনিধি

বান্দরবানে ব্যাপকভাবে আনন্দ মুখব পরিবেশে আনন্দ উৎসব উদযাপন করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে – নবগঠিত উৎসব উদযাপন কমিটি ।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের আসন্ন সাংগ্রাই উৎসব উদযাপনের লক্ষ্যে জেলা সাধারণ লোকজনের সাথে আলোচনার মাধ্যমে এ কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
সোমবার (৩ফেব্রুয়ারি ২০২৫) উৎসব উদযাপন পরিষদের নবগঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করে বলা হয় ২০ ফেব্রুয়ারি জেলা সদরে একটি হলরুমে উৎসব উদযাপন পরিষদের এক সভায় কমিটি সভাপতির পদ থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন-অংচমং মার্মা।
২২ ফেব্রুয়ারি মাস্টার গেস্ট হাউসে উৎসব উদযাপন কমিটির এক সভায় সর্বসম্মতিক্রমে চনুমং মার্মাকে সভাপতি ও উক্যসিং মার্মাকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই বছর মেয়াদে ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি পুনর্গঠন করা হয়।
ওই সময় বিদায়ী সভাপতি অংচমং মার্মাকেও বিদায় সম্বর্ধনা দেয়া হয়।

উৎসব উদযাপন পরিষদের নবনির্বাচিত সভাপতি চনুমং মার্মা জানিয়েছেন, এবার থেকে বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব উদযাপনের পাশাপাশি প্রায় হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও সাংস্কৃতিক বিষয়গুলোকে সংরক্ষণ করতে অনুষ্ঠানগুলোতে গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরার চেষ্টা করা হবে।

আগামী এপ্রিল মাসে মাহা সাংগ্রাই পোয়ে উৎসব উদ্যাপনেও ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণের জন্য সবাইকে নিয়ে সভা করা হচ্ছে জানিয়ে নবনির্বাচিত সভাপতি চনুমং মার্মা বলেন, উৎসবে সবাই আনন্দ উপভোগ করা যায়, এ বিষয়টি মাথায় রেখে কমিটির সবার মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ শুরু করেছেন তিনি।
উৎসব উদযাপন জেলা সদরে সীমাবদ্ধতা না রেখে উপজেলা পর্যায়েও সম্পৃক্ততা রাখবার জন্য মতবিনিময় করা হবে। যাতে উৎসব উদযাপনের আনন্দ-উপভোগ করতে তৃণমূল পর্যায় থেকেও অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি হয়।
গৃহীত কর্মসূচিগুলো সুন্দর ও সার্থক গড়ে তুলতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

বিদায়ী সভাপতি অংচমং মার্মা বলেছেন, নবগঠিত কমিটি যেকোনো উৎসব উদযাপনের সবসময় আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা রাখতে হবে। এটা নিশ্চিত করা গেলে কমিটির সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে।

দায়িত্ব গ্রহণের ছয় মাসের পর সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি নেয়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, সংক্রামক ব্যাধি করোনা ভাইরাসের আগে দুই বছর মেয়াদে দুইবার বান্দরবানে উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ওইসময় যেকোনো উৎসব উদযাপনের বেলায় নিজেই এবং কমিটি সদস্যদের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বিশেষ করে আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতেন বলে উল্লেখ করেন অংচমং মার্মা।

উল্লেখ্য যে, বান্দরবানে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা প্রতিবছর এপ্রিল মাসের মাঝামাঝিতে মাহা সাংগ্রাই পোয়ে উদযাপন করা হয়ে থাকে। এ সময় যুব-যুবতীদের মধ্যে দলবেঁধে একে অপরে পানি ছিটিয়ে উৎসব উদযাপন করে। যে অনুষ্ঠানটি “মৈত্রী পানি বর্ষণ” অথবা “জল কেলি” অনুষ্ঠান নামে পরিচিত।
এটি মূলত; সামাজিক অনুষ্ঠান হলেও অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে জনসমাগমে ব্যাপকতায় পাহাড়ি-বাঙালি উপস্থিতি এক মিলনমেলায় পরিণত হয়ে যায়। ফলে মাহা সাংগ্রাই পোয়ে সবার কাছে পরিচিতি লাভ করেছে। এছাড়াও বান্দরবান পার্বত্য জেলায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বছরে আষাঢ়ী পূর্ণিমা ও আশ্বিনী পূর্ণিমা বা প্রবারণার সময় নানা উৎসব উদযাপন করে থাকে। মূলত এসব অনুষ্ঠান সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে এই উৎসব উদযাপন কমিটি গঠন করা।