—–
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজশাহীর পবা উপজেলার দারুশা রাধানগর এলাকায় জোরপূর্বক কৃষকের ভিটা জমি দখল ও পুকুর খননের অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত মিনারুল ইসলাম ও রাজু আহম্মেদের বিরুদ্ধে। তারা দুজনই বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামি।
অভিযোগ রয়েছে,রাজশাহী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আয়েন উদ্দিন এমপি থাকাকালে তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে কৃষকদের জমি দখলের নেশায় বুঁদ ছিলেন মিনারুল ও রাজু।
স্থানীয়দের দাবি,বহু কৃষক নামমাত্র টাকা কিংবা কোনো মূল্যই না পেয়ে জমি থেকে উচ্ছেদ হয়েছেন।
ভুক্তভোগী কৃষক আব্দুল রউফ জানান, “আমাকে বলা হয়েছিল টাকা দিয়ে জমি কিনবে। কিন্তু জমির অন্য মালিককে নামমাত্র টাকায় রেজিস্ট্রি করলেও আমি কোনো টাকা পাইনি। রাজি না হওয়ায় এমপির প্রভাবের কাছে টিকতে পারিনি। বছরের পর বছর ঘুরেছি,কোনো ন্যায়বিচার পাইনি। এখন আমার ভিটা জমিতে মিনারুল আর রাজুর পুকুর। পরিবার নিয়ে খেয়ে না খেয়ে কোনোমতে বেঁচে আছি।
তার ছেলে মো: রাসেল ইসলাম বলেন, “আমরা ২৪ জুলাই ২০২৫ তারিখে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি। কিন্তু কোনো সহযোগিতা পাইনি। জমি হারিয়ে আমরা আজ শঙ্কায় আছি। আইন আজ টাকার কাছে অন্ধ।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, মিনারুল ইসলাম নামে থানায় মামলা থাকলেও তিনি প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেড়ান। একদিকে হত্যা মামলার আসামি,অন্যদিকে কৃষকের জমি দখল করে নেওয়ার পরও প্রশাসন নীরব।
একাধিক গ্রামবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “যে মানুষ আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়েছে, সে এখন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে অথচ পুলিশ ধরছে না। কেন এই নীরবতা?
এ বিষয়ে হজরিপাড়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো: ইসাহাক আলী বলেন, “আমাকে জমি দখল করে পুকুর খননের বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ জানায়নি। তবে জমিটিতে অনেক আগে থেকেই পুকুর খনন করা আছে।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো: শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে বলেন, “আজ ইউনিয়ন অফিস বন্ধ,আমি দাওয়াত খেতে এসেছি। সব সময় ফোন করবেন না।” এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।
অভিযুক্ত মিনারুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কোনো বক্তব্য দেননি। তবে স্থানীয়দের দাবি, তিনি আত্মগোপনে থাকার নাম করে প্রতিদিনই এলাকায় বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় ঘুরে বেড়ান এবং রাতে নিজ বাসায় থাকেন।
এ বিষয়ে কর্ণহার থানার ওসি মাহাবুব বলেন, “ভুক্তভোগীদের অভিযোগ আমরা পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।