বান্দরবানের লামা উপজেলায় খেলার মাঠের সংখ্যা অপ্রতুল। একদিকে প্রশস্ত খেলার মাঠের অভাব, অন্যদিকে পুরাতন মাঠগুলো রক্ষণাবেক্ষণে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় তরুণ সমাজ ক্রীড়াঙ্গন থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, এবং শিশুরা বঞ্চিত হচ্ছে খেলাধুলা নামক শারীরিক ও মানসিক বিকাশের চিন্তাধারা থেকে। ফলে অনেকই ঝুঁকছে মোবাইল গেমিং সহ মাদক, জুয়া ও অনৈতিক কার্যকলাপে। যা তাদের সুস্থ জীবন-যাপনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ জুড়ে এবড়ো থেবড়ো, আর কাদায় ভরা। মাঠের মূল ফটক দিয়ে ঢুকতে গেলেই কাদা পার হওয়া ছাড়া উপায় নেই। মাঠটির চারদিক যেমন ভাঙাচোরা, ভেতরের অবস্থা আরও করুণ। মূল ফটকের আশেপাশে আবর্জনার স্তূপসহ কর্দমাক্ত মাঠের বিভিন্ন স্থানে নোংরা পানি জমে আছে। এতে খেলতে গিয়ে বিভিন্ন সময় গুরুতর আহত হন আগ্রহী খেলোয়াড় ও শিক্ষার্থীরা।
লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান, মাঠ সংস্কারের জন্য পর্যাপ্ত তহবিলের অভাবে তারা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছেন না। এতে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানষিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এই মাঠ সংস্কার ও উন্নয়নের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহন জরুরি।
একই অবস্থা দেখা যায় টি,টি এন্ড ডিসি মাঠের। দীর্ঘদিন কোনো সংস্কার না হওয়ায় অসমতল এবং খেলার অযোগ্য হয়ে গেছে প্রায়। পুরোটা মাঠ জুড়ে খুঁটি পোঁতার গর্ত। ফলে মাঠটিতে খেলাধুলা করা কঠিন হয়ে পড়েছে, বিশেষ করে শিশুদের জন্য। মাঠের এই বেহাল অবস্থার কারণে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, মাঠের সীমানা প্রাচীর ও মাঠগুলো যেন ব্যবহারোপযোগী করা হয়।
স্থানীয়রা বলছেন, একসময় লামা থেকে অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় উঠে এলেও, এখন উপযুক্ত মাঠের অভাবে ক্রীড়াঙ্গনে পিছিয়ে পড়েছে। যুবসমাজ, অভিভাবক ও ক্রীড়া সংগঠনগুলো এই পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা লামার ক্রীড়ার ঐতিহ্য এবং যুবসমাজের ভবিষ্যৎ রক্ষায় দ্রুত মাঠগুলো সংস্কার ও আধুনিকায়নের দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি, মাঠগুলোর নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের দাবিও জানান।
এদিকে ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাব ও চট্টগ্রাম কিষোয়ান স্পোর্টিং ক্লাব থেকে একাধিকবার চ্যাম্পিয়ন হওয়া লামার সন্তান মো. আরিফ মিয়া বলেন, পর্যাপ্ত মাঠের অভাবে আমাদের লামা ক্রীড়াঙ্গন অত্যন্ত পিছিয়ে রয়েছে। এখানে খেলার মত উপযোগী মাঠ নেই। অন্যত্র গিয়ে প্র্যাকটিস করতে হয়। অন্ততঃ হাইস্কু্লের মাঠটি সংস্কার করলে ক্রীড়াঙ্গনের দিক দিয়ে লামা অনেকটাই এগিয়ে যাবে।
এবিষয়ে লামা উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটির আহবায়ক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক মো. মাঈন উদ্দীন বলেন, 'মাঠের দুরাবস্থার বিষয়টা লক্ষ্য করেছি। সমস্যা সমাধানে অতি দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।’