আধুনিক সভ্যতা যতই এগিয়ে যাক না কেন, মাদকাসক্তি যেন তার পেছনে ছায়ার মতো লেগেই থাকে। আজকের তরুণ, যাদের কাঁধে ভবিষ্যতের দায়িত্ব—তারা অনেকেই মাদকের ছোবলে ধ্বংসের পথে হাঁটছে। মাদক শুধু একটি ব্যক্তি নয়, তার চারপাশের মানুষদেরও নিঃশেষ করে ফেলে। এটা কোনো শখ নয়, এটা একটি আসক্তি—যার শেষ গন্তব্য মৃত্যু।
মাদক শরীরকে ভেতর থেকে গিলে খায়। দীর্ঘদিন মাদক গ্রহণ করলে যে কেবল লিভার, কিডনি বা মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা নয়—এর প্রভাব পড়ে চিন্তা করার ক্ষমতায়, মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণে, এমনকি বিবেকবোধেও। একজন মাদকাসক্ত ধীরে ধীরে নিজের পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। আত্মবিশ্বাস হারিয়ে সে হয়ে পড়ে এক অবাঞ্চিত আত্মা, যার জীবনে আর আলো জ্বলে না।
বাংলাদেশে মাদকের বিস্তার: একটি উদ্বেগজনক চিত্র -
সাম্প্রতিক জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর হাজার হাজার তরুণ নতুন করে মাদকের ফাঁদে পড়ে। ইয়াবা, গাঁজা, হেরোইন, ফেনসিডিল—এগুলো কেবল সীমান্ত পেরিয়ে এসে আমাদের সমাজে ঢুকছে না; এগুলো ভাঙছে পরিবারের বন্ধন, নষ্ট করছে স্বপ্ন। শহর, মফস্বল এমনকি গ্রামের উঠোনেও এখন মাদকের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলেমেয়েরা আজকাল সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণি।
"সেবার আলোর পথ মাদকাসক্তি পুনর্বাসন সহায়তা কেন্দ্র কেবল একটি চিকিৎসাকেন্দ্র নয়, এটি এক ধরনের নতুন করে জীবন ফিরে পাওয়ার জায়গা। এখানে রোগীদের শুধু চিকিৎসা দেওয়া হয় না, তাদের আত্মিক, মানসিক এবং সামাজিক উন্নয়নের দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হয়।
👉 ২৪ ঘণ্টা ডাক্তার ও সাইকোলজিস্টের তত্ত্বাবধানে রোগীদের চিকিৎসা চলে
👉 নিরাময় প্রক্রিয়ায় রয়েছে মনোচিকিৎসা, থেরাপি, গ্রুপ ডিসকাশন এবং রিহ্যাব সেশন
👉 ধর্মীয় অনুশাসন ও নিয়মিত প্রার্থনার মাধ্যমে রোগীদের আত্মিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা হয়
👉 পরিবারকে সম্পৃক্ত করে কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে রোগীর সামাজিক অবস্থান পুনরুদ্ধারে সহায়তা করা হয়।একটি সমাজকে যদি সুস্থ রাখতে হয়, তাহলে সেখানে মাদক নামক দানবের জায়গা থাকতে পারে না। শুধু পরিবার নয়, স্কুল, কলেজ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, সরকার এবং বেসরকারি সংগঠন—সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। আর যারা এই ভয়াবহ অভ্যাসে জড়িয়ে গেছে, তাদের ত্যাগ না করে সাহায্যের হাত বাড়ানো উচিত। কারণ, প্রতিটি মানুষই দ্বিতীয় সুযোগ পাওয়ার যোগ্য।
মিজানুর রহমান ডালিম ( নির্বাহী পরিচালক) 01742279333