শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ১১:০৩ পূর্বাহ্ন
Notice :
ঢাকাসহ সারা দেশে ২৫০ জন ‘অনলাইন করেসপনডেন্ট’ নিয়োগ দেবে দৈনিক বাংলার সমাচার ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও মনমনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন উপজেলা ও অঞ্চলে ২৫০ জন ‘অনলাইন করেসপনডেন্ট’ নিয়োগ চলছে

লামায় সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী হামলায় বিদ্যালয় ও বসতবাড়ী লুট, নারীকে বেঁধে শ্লীলতাহানি, বেদড়ক মারধরে প্রধান শিক্ষকসহ আহত ৫জন….

বার্তা সম্পাদক / ৪৮ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ

বান্দরবানের লামার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের হায়দারনাশী এলাকায় রাতের আঁধারে সংঘবদ্ধ হয়ে জাফর ইকবাল, নজরুল ইসলাম কুতুব উদ্দিনপ্রকাশ গুরা সোনামিয়া, মামুন ও রেজাউলসহ আরো ৩০-৩৫জনের নেতৃত্বে হায়দারনাশী গ্রামার স্কুল ও বসতবাড়ীতে হামলা ও লুট এবং মারধরের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছে ভূক্তভোগী পরিবারের পক্ষে ফরিদুল আলম বাবলু।

শনিবার(১২-০৭-২০২৫ইং)সাড়ে ৩টায় লামা সংবাদিক ফোরামে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মোঃ ফরিদুল আলম বাবলু লিখিত বক্তব্য পাঠ করে জানায়, আমি পেশায় হায়দারনাশী গ্রামার স্কুল এর প্রধান শিক্ষক এবং লামা সংবাদিক ফোরাম এর সহ-সভাপতি এবং লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের হায়দানাশী এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা হই। আমার পিতা- সামশুল আলম, পিং সৈয়দ আহামদ এর নামে ২৮৬নং ফাঁসিয়াখালী মৌজার আর/১৩৭১নং হোল্ডিং এর আন্দর ২.০০ (দুই) একর ২য় শ্রেণীর জমি তৌজিভূক্ত আছে। উক্ত জমি আমার পিতার নামে বিগত ১৯৭৯-৮০ইং সনের ৪১৬৫নং বন্দোবন্ধি মোকদ্দমা মূলে প্রাপ্ত হয়ে বসত বাড়ি স্থাপন করে স্ব-পরিবারে শান্তিপূর্ণ ভাবে বিগত ৪০/৪৫ বছর যাবৎ ভোগ দখলে স্থীত আছি। বিগত ২০১৮ সালে আমার পিতা এলাকার কোমলমতি শিশু কিশোরদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে হায়দারনাশী গ্রামার স্কুল স্থাপন করার জন্য তাহার নামীয় উক্ত হোল্ডিং এর কিছু জমি দান করেন। জাফর ইকবাল চৌধুরী, তার ভাই নজরুল ইসলাম, কুতুব উদ্দিন (প্রকাশ শুরা সোনাইয়া), মামুন, হারুন ও রেজাউল আমার পিতার নামীয় উক্ত জমির উপর লোভের বশবর্তী হয়ে জায়গা জবর দখল করার উদ্দেশ্যে বিগত ২০০৮ সাল হইতে অনর্থক আমাদের সাথে বিরোধ চালিয়ে আসছে। তৎকালীন সময়ে তাহারা আমাদের জায়গা জবর দখল করার অপচেষ্টা করে আমরা বাঁধা দিলে আমাদের উপর হামলা করে গুরুতর জখম করায় আমার মাতা- সাফিয়া বেগম কোন উপায় খুঁজে না পেয়ে উক্ত বিষয়ে লামা থানায় ১০৬/২০১০নং জি.আর মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে বিবাদীগণ আমাদের সাথে ঝগড়া বিবাদ করিবে না মর্মে আপোষ নামা দিয়ে মামলাটি মিমাংসা করা হয়। কিন্তু তাহারা বর্তমানে অন্য জায়গার একটি দলিল দিয়ে আমাদের জায়গা দাবি করে পুঃণরায় একই ভাবে আমাদের জায়গা জবর দখল করার চেষ্টা করে। তাহাদের এমন কর্মকান্ডের কারণে আমি বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, লামা চৌকি আদালত, বান্দরবানে সি.আর মামলা নং- ১৪২/২০২৫ দায়ের করি। কিন্তু তাহারা বার বার সন্ত্রাসী কায়দায় আমাদের জায়গা জবর দখল করার চেষ্টা চালানোয় আমি লামা থানায় জি.আর ৪৩/২৫, সিনিয়র সহকারী জজ আদালত বান্দরবানে দেওয়ানী অপর মামলা নং- ৮০/২৫, নির্বাহী আদালত লামায় পিটিশন নং- ৩৩/২৫ দায়ের করি। কিন্তু তাহার পরও উল্লেখিত ব্যক্তিগণ আমাদের জায়গা জবর দখল করার উদ্দেশ্যে মারাত্মক প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছে।

এ ছাড়া উক্ত জায়গার উপর বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালত ও বিজ্ঞ নির্বাহী আদালত লামার নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও গত ১১/০৭/২০২৫ইং তারিখ দিবাগত রাত আনুমানিক ১:০০ ঘটিকায় উল্লেখিত ব্যক্তিগণ নেতৃত্ব দিয়ে ৩০/৩৫ জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী সহ জায়গা জবর দখল করার উদ্দেশ্যে আমাদের বসতবাড়িতে এসে আমার মা- সাফিয়া বেগম, আমার স্ত্রী- সানজিদা আক্তার, আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী- আসমাউল হোছনা, আমার ভাগিনী, আমার দুই বাচ্চা শিশু, আমার ছোট ভাইয়ের দুই শিশু সহ আরও অনেক কে ঘুমন্ত অবস্থায় দরজা ভেঙ্গে জোর পূর্বক প্রবেশ করে মারধর করে টানা হেচড়া করে বসত ঘর হইতে বের করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে লোহার রড ও মোটা লাঠিসোটা দিয়ে এলোপাতাড়ি সকলকে মারধর করে এবং বাড়ির মহিলাদের শ্লীলতাহানী করে। তাছাড়া আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী- আসমাউল হোছনার শরীরের বিভিন্ন অংশে কামড় দিয়ে মারাত্মক জখম করে। অতঃপর সন্ত্রাসী বাহিনী “হায়দারনাশী গ্রামার স্কুল” ও আমাদের তিনটি বসতঘর সহ আশবাবপত্র ভাংচুর করে সাড়ে চার ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার, নগদ আনুমানিক ৩,১০,০০০/- টাকা, ৫৬ ইঞ্চি এনড্রয়েড টিভি, সিসি ক্যামেরা ও হার্ডডিক্স, দুইটি মোটর সাইকেল, “হায়দারনাশী গ্রামার স্কুলের শিক্ষার্থী পরিবহনের একটি টমটম, জায়গা জমির বিভিন্ন মূল দলিলাদি, আমাদের ব্যবহৃত কাপড় চোপড়, লেপ, তোষক, কম্বল, আমাদের ব্যবহৃত মোট ০২ টি এন্ড্রয়েট ও ০২ টি বাটম ফোন সহ আরও মূল্যবান জিনিসপত্র ভাংচুর ও লুটপাট করেনিয়ে যায়।

ফরিদুল আলম সংবাদ সম্মেলনে আরো অভিযোগ করেন, সন্ত্রাসীরা হায়দারনাশী গ্রামার স্কুলে প্রবেশ করে আমাকে হত্যার চেষ্টা করলে আমি বহু কষ্টে আত্মরক্ষা করি। অতঃপর স্কুলের একটি প্রজেক্টর, কম্পিউটার ল্যাবের ১০ টি ল্যাপটপ ও স্কুলের বিভিন্ন মূল্যবান দাপ্তরিক কাগজ পত্র নিয়ে যাওয়া সহ বিভিন্ন আসবাবপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়। উল্লেখ্য যে, ঘটনার শুরুতেই আমার পিতাকে জিম্মি করে নিয়ে যায়, আমার মায়ের পরনের কাপড় দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রেখে শ্লীলতাহানী করে, আমার স্ত্রীকে অস্ত্র দিয়ে বারি মেরে মারাত্মক জখম করে এবং অন্যান্য সকলকে লোহার রড ও মোটা লাঠিসোটা দিয়ে মারধর করে। এর আগে গত ০৯/০৬/২০২৫ইং তারিখ উল্লিখিত সন্ত্রাসীরা দুপুর আনুমানিক ০২:০০ ঘটিকার সময় আমার পিতার সেমিপাকা বাড়ির একঅংশ সম্পূর্ণ ভেঙ্গে ফেলে এবং ঘরে প্রবেশ করে বিভিন্ন মালামাল ও ঘর সংলগ্ন স্কুল ক্যান্টিনে অনধিকার প্রবেশ করে টাকা পয়সা ও বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়। আরও উল্লেখ্য যে, উপরোক্ত ব্যক্তি ও তাহাদের সন্ত্রাসীরা একই ভাবে পর পর ০৫ বার আমি ও আমার পরিবারকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে। প্রতিবারই জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন করে আমি ও আমার পরিবার প্রাণে রক্ষা পাই। কিন্তু পরবর্তীতে প্রশাসন কোন জোরালো আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নাই বলে জানায়।

সন্ত্রাসীদের এমন কর্মকান্ড থেকে বাঁচতে সংবাদ সম্মেলনে ফরিদুল আলম বাবলু আরো জানায়, আমাদের জায়গা হইতে উচ্ছেদ করার জন্য এমন সন্ত্রাসী কায়দায় আমাদের প্রাণে হত্যার চেষ্টা, মারধর, লুটপাট, বাড়িঘর ভাংচুর ও জায়গা জবর দখল চেষ্টা অব্যাহত থাকায় পুলিশ, আদালত, প্রশাসন, সাংবাদিক সহ সকলের সহযোগিতা চেয়েছে।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ