---- সামর্থ্যবান ব্যক্তিবর্গ আর্থিক সহায়তার হস্ত প্রসারিত করুন।
মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ
একজন ক্যান্সার আক্রান্ত সাংবাদিককে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন।
আমাদের মাঝেই বিচরণ করেছিলেন পার্বত্য বান্দরবানের লামায় সাংবাদিক ইসমাইল হোসেন সোহাগ। তিনি দীর্ঘবছর যাবৎ মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দূর্বিসহ জীবন যাপন করছেন। রবিবার ৬ জুলাই তার সাথে আলাপকালে কষ্টময় জীবনের কথা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, মরণব্যাধি ক্যানসারের সাথে যুদ্ধ করে এখনো বেঁচে আছি, এটাকে বেঁচে থাকা বলেনা। রোগীরা চায় দৃঢ় মনোবল ও আপনজনের পরামর্শ সহ বিভিন্ন ধরণের সহযোগিতা। এই রোগের বর্ণনা দিতে পারে তিনিই, যার ভিতর ক্যান্সার নামক ঘাতকের বসবাস একমাত্র তিনিই বুঝতে পারবে এরোগের কষ্ট আর যন্ত্রণা কি? এছাড়াও কেমোথেরাপি ও রেডিও আয়োডিন দেয়ার সময় কঠিন কষ্ট আর যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। এসময় রোগীদের মাথার চুল সহ পুরো শরীরের বিভিন্ন ধরণের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তখন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কষ্ট আর যন্ত্রণা গুলো মেনে নিতে হয় রোগীদের, যা একজন সুস্থ মানুষকে কখনো বর্ণনা দিয়ে শেষ করা যাবে না।
জানা যায়, সাংবাদিক ইসমাইল হোসেন সোহাগ-এর (গত ১২ জুন'২২) হতে মরণব্যাধি ক্যান্সার ধরা পড়ে। এরপর থেকেই তার জীবন-যুদ্ধের গল্প শুরু হয়। তিনি পেশায় একজন গণমাধ্যম কর্মী। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশায় কর্মরত রয়েছেন। এছাড়াও তিনি একজন অভিজ্ঞ ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব। তিনি একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তার পিতা একজন আদর্শবান (শিক্ষক) মানুষ গড়ার কারিগর। বর্তমানে তিনিও (বাবা) খুবই অসুস্থ। ইসমাইল হোসেন সোহাগ-এর সংসারে আড়াই বছরের একটি ফুটফুটে বাচ্চা রয়েছে। তিনি কখনো কল্পনাও করেনি এ ধরণের রোগ তার ভিতর বসবাস করছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের ধারণা অনুযায়ী তার ভিতর অনেক আগে থেকেই ক্যান্সার ছড়িয়েছে। তবে তার কোন ধরণের ব্যাথা বা যন্ত্রণা না থাকায় তিনি তেমন অনুভব করতে পারেনি। মাঝে মধ্যে খাওয়ার সময় ব্যথা অনুভব করতো।
প্রথমে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও একটি বেসরকারী হাসপাতালে দেখানো হয়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী একাধিক পরীক্ষা করার পর তৃতীয় স্টেজ-এ ক্যান্সার ধরা পড়ে। এসময় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে দ্রুত সময়ে সকলের আন্তরিক সহযোগিতায় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে একটি হাসপাতালে তার অপারেশন করা হয়। এরপর থেকে শুরু হয় তার মরণব্যাধি ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধ। ইন্ডিয়ার চিকিৎসকরা আশ্বাস দিয়েছেন, সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে কত দিনে সুস্থ হবে বা সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু, তা বলে'নি। চিকিৎসা চলমান রাখতেও বলেন ইন্ডিয়ার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
সাধারণ মানুষের মতে, ইসমাইল হোসেন সোহাগ ব্যক্তি জীবনে তিনি অত্যন্ত নম্র, ভদ্র, সদা হাস্যোজ্বল ও সাদা মনের মানুষ। তার মাঝে কোন প্রকার অহংকার নেই। তার অসুস্থতার খবর পেয়ে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে মানুষ তাকে দেখতে ভিড় জমায়। তার জন্য সকল ধর্মের মানুষ আন্তরিক ভাবে দোয়া/আশীর্বাদ ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, এবং এখনো করে যাচ্ছে। ইসমাইল হোসেন সোহাগ তার জীবনে একটা মিনিটও কাজ ছাড়া বসে থাকেনি। সবসময় আন্তরিকতা দেখাতো, মিষ্টি হাসি দিয়ে সবার সাথে কথা বলতো। সবসময় মানুষের উপকার করার আগ্রহ ছিলো। আর এখন বসে থাকার সময় গুলো পার করছে অনেক কষ্ট আর যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে। তার অজান্তে জীবনটা যে এত দ্রুত বদলে যাবে সে কখনো কল্পনাও করতে পারে নাই। আগে নিয়মিতই ভোরের দিকে কত সুন্দর দিন শুরু করতো। নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করতো দিন, যখন সুস্থ ছিলো। তার জন্য সকলেই আন্তরিক ভাবে দোয়া করতেছি যাতে, মহান আল্লাহ্ পাক তাকে পরিপূর্ণ সুস্থতা দান করেন।
একান্ত আলাপকালে ইসমাইল হোসেন সোহাগ জানান, আমার জীবন বদলে গেছে, এত অল্প সময়ে বদলে যাবে কখনো কল্পনা করতে পারি নাই। ক্যান্সার ধরা পড়ার পর থেকে এ পর্যন্ত অনেকবার কেমোথেরাপি ও রেডিও আয়োডিন নিতে হয়েছে। সেগুলো নেওয়া খুব কষ্ট আর যন্ত্রণা সহ্য করার মতো না। কিন্তু এটা যে এত কষ্ট হয় তা কখনো জানতাম না। শরীরের বাহ্যিক কিছু পরিবর্তনও এসেছে। প্রথমবার কেমোথেরাপি নেওয়ার সপ্তাহ দুই এক পর হঠাৎ চুলের গোড়ায় প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করলাম, আলতো করে হাত দিলাম মাথায়। এক মুঠো পরিমাণ চুল হাতে চলে এল। এরপর চুল কামিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিলাম। নখগুলো কালো হয়ে গিয়েছিল। তবে বাহ্যিক সৌন্দর্য নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়িনি, কারণ জীবনের মূল্য তো অনেক বেশি। প্রথম থেকেই খাবার খেতে না পারা, মুখে সংক্রমণ, গলায় সংক্রমণ, বমি, দূর্বলতা সহ নানান রকমের কষ্ট। তবে শেষ দু'বার রেডিও আয়োডিন নেওয়ার পর ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়ি। প্রচণ্ড ব্যথা হয়, উচ্চমাত্রার ব্যথানাশক প্রয়োজন হয়। হাঁটতে খুব কষ্ট হয়, মাথা ঘুরিয়ে পড়ে যাই। এখন কোথাও যদি যেতে হলে গাড়ি ছাড়া যাওয়া সম্ভব নয়। আগের সেই ব্যস্ততা, সেই কর্ম পরিসরের কিছুই নেই।এখন বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে ক্যান্সারকে বন্ধু বানিয়ে বশে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এদিকে আমি অসুস্থ হওয়ার পর থেকে পরিবারের সবকিছু থেমে গেছে।
সকলের প্রতি অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ইসমাইল হোসেন সোহাগ বলেন, পৃথিবীতে ভালোবাসা অমূল্য। মানুষের এতই যে, ভালোবাসা কখনো ভুলবার নয়। আমাকে সবাই যে এত ভালোবাসে তা বুঝতে পেরেছি। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন। যাতে মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ কৃপায় এবং আপনাদের সকলের দোয়া'র উচিলায় আবার নতুন ভাবে পরিপূর্ণ সুস্থ করে দেন এবং আপনাদের মাঝে ফিরে আসতে পারি।
যারা ক্যান্সারে আক্রান্ত সাংবাদিক ইসমাইল হোসেন সোহাগ-এর সাথে নিন্মোক্ত বিকাশ নাম্বারে যোগাযোগ করবেন- ০১৮৩২-৩৬৮৬৫৬ (বিকাশ) এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান করবেন।
সম্পাদক-প্রকাশক: মোঃ তৌহিদুল ইসলাম । নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ শাহনেওয়াজ। বার্তা সম্পাদক: মোঃ হাসেম।
ঘরে বসে আপনার পণ্য ও প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিন 09638-574273 - 01616-885650