শিরোনাম
সীতাকুণ্ডে গাড়ী চাপায় ট্রাক সহকারী ও নৈশ্য প্রহরীর মৃত্যু আজ ১০ মে ২০২৫, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল এর উদ্যোগে চট্টগ্রামে “তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ” অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা বিভাগের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পেকুয়ায় সাংবিধানিক অধিকার ও পিতা মাতার ভরণ পোষণ আইন বিষয়ে কর্মশালা অনুষ্ঠিত চট্টগ্রামে তরুণে পরিপূর্ণ বিএনপির সমাবেশ চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সাড়ে ৫৮ লাখ টাকা ক্যাশিয়ারের পকেটে  কুড়িগ্রামে নাশকতা বিরোধী বিশেষ অভিযানে ১৫ ফ্যাসিস্ট গ্রেফতার আলীকদমে ১৭৫০ পিস ইয়াবাসহ একজন আটক, আদালতে সোপর্দ রংপুরে পরিক্ষা নকলের ভিডিও করায় ৫ সাংবাদিকের ওপর হামলা হাসপাতালে ভর্তি রায়গঞ্জে উদ্ভাবিত নতুন জাতের প্রিমিয়াম কোয়ালিটির  বোরো ধান বিনা-২৫ চাষে কৃষকের সফলতা খালেদা জিয়া দেশে ফেরায় অভয়নগরে আনন্দ মিছিল ও পথসভা অনুষ্ঠিত
রবিবার, ১১ মে ২০২৫, ০৮:৪৩ অপরাহ্ন
Notice :
ঢাকাসহ সারা দেশে ২৫০ জন ‘অনলাইন করেসপনডেন্ট’ নিয়োগ দেবে দৈনিক বাংলার সমাচার ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও মনমনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন উপজেলা ও অঞ্চলে ২৫০ জন ‘অনলাইন করেসপনডেন্ট’ নিয়োগ চলছে

শাহজাদপুরে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৩ দিনব্যাপী ১৬৪তম জন্মোৎসব শুরু

বার্তা সম্পাদক / ৮ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ৯ মে, ২০২৫

আজিজুর রহমান মুন্না, সিরাজগঞ্জ

উনবিংশ শতাব্দীর বাংলা সাহিত্যে ও বিশ্বের জ্ঞান পরিমন্ডলে বহুমুখী প্রতিভাসম্পন্ন নোবেলজয়ী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনে ও সাহিত্যের ভূবণে এক অবিস্মরণীয় নাম ‘সাজাদপুর’ (শাহজাদপুর) ! শাহজাদপুরের উন্মুক্ত- উদার দ্বারে এসে নিখিল বিশ্বের সামনে কবি প্রাণের গভীর বন্ধন সূচিত হয়। তাঁর চিত্তে ও কর্মবোধের সর্বোচ্চ সমন্বয় ঘটেছিলো শাহজাদপুরের মাটিতে এসে। জমিদারি কাজের জন্য এসে শাহজাদপুরেই কবি খুঁজে পান সাহিত্যের গভীরতম উপাদান যা তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। 

কবিগুরুর স্বহস্তে লেখা একটি ছিন্নপত্রে উল্লেখ করেছেন, “এখানে (সাজাদপুরে) আমার লেখার যে ভাব আসে, অন্য কোথাও তা না।” কবিগুরুর সেই স্মৃতিধন্য শাহজাদপুরের রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কবিগুরুর ৩ দিনব্যাপী জন্মোৎসবের আয়োজন করেছে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসন। 
আজ ২৫ শে বৈশাখ (বৃহস্পতিবার) সকালে সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত শাহজাদপুরের রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মোৎসব উপলক্ষ্যে ৩ দিনব্যাপী রবীন্দ্র জন্মোৎসব উদযাপন শুরু হয়েছে।
এদিন বেলা সাড়ে ১০ টায় সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ৩ দিনের ওই অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভার উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আব্দুল খালেক। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক খায়রুন নিসা। আলোচনা করেন, সিরাজগঞ্জ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. রাফাত আলম।
উদ্বোধনী দিনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আব্দুল খালেক বলেন, ‘আমাদের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জমিদারি দেখাশোনার জন্য শাহজাদপুরে এসে ভালোবেসে ফেলেছিলেন শাহজাদপুরের মাটি ও মানুষকে। এ অঞ্চলের মানুষের সাথে তাঁর ছিলো মানবিক সম্পর্ক। সোনারতরী, পোষ্টমাষ্টারসহ অসংখ্য দুর্লভ সাহিত্য এখানে বসেই তিনি রচনা করেছেন যা বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বদরবারে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। রবীন্দ্রনাথ এখনও বেঁচে রয়েছেন, থাকবেন তাঁর সাহিত্যকর্মের মধ্যে! ‘
এদিকে, কবিগুরুর ১৬৪তম জন্মোৎসব উদযাপন উপলক্ষে রবি কবির স্মৃতিধন্য শাহজাদপুরের কাছারিবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা রঙিন সাজে সাজানো হয়েছে। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত পর্যটক ও রবীন্দ্র অনুরাগীদের পদচারনায় মুখরিত ও প্রাঞ্জলিত হয়ে উঠেছে কাছারিবাড়ি অঙ্গণ। রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের কাছারিবাড়ি রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিবিজড়িত একটি ঐতিহাসিক স্থান ও পর্যটন কেন্দ্র।  তিন তৌজির অন্তর্গত ডিহি শাহজাদপুরের জমিদারি একদা নাটোরের রানী ভবানীর জমিদারির অংশ ছিল। ১৮৪০ সালে শাহজাদপুরের জমিদারি নিলামে উঠলে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর মাত্র তেরো টাকা দশ আনায় এই জমিদারি কিনে নেন। জমিদারির সঙ্গে সঙ্গে ওই কাছারিবাড়িও ঠাকুর পরিবারের হস্তগত হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। আগে কাছারিবাড়ির মালিক ছিল নীলকর সাহেবরা। ১৮৯০ সাল থেকে ১৮৯৬ সাল পর্যন্ত কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জমিদারি দেখাশোনার কাজে শাহজাদপুরে সাময়িকভাবে আসা-যাওয়া ও বসবাস করতেন। তিনি স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন কুষ্টিয়ার শিলাইদহে। সম্ভবত এই কারণেই শিলাইদহে তাঁর বাসগৃহ কুঠিবাড়ি নামে এবং শাহজাদপুরের বাড়িটি কাছারিবাড়ি নামে পরিচিত। আগে কাছারিবাড়িতে নীলকর সাহেবরা বসবাস করতেন।
শাহজাদপুরে কবিগুরু ঘুরে বেড়িয়েছেন পালকিতে, নৌকায় ও পায়ে হেঁটে। শাহজাদপুর পৌর এলাকার প্রাণকেন্দ্র দ্বারিয়াপুর বাজারে অবস্থিত উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ শাহজাদপুর কাপড়ের হাটের দক্ষিণ পাশে এক সবুজ শ্যামল পরিবেশে কবিগুরুর কাছারিবাড়ি অবস্থিত। শাহজাদপুরের কাছারিবাড়িটি ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত একটি দ্বিতল ভবন। ভবনটির দৈর্ঘ্য ২৬.৮৫ মিটার, প্রস্থ ১০.২০ মিটার এবং উচ্চতা ৮.৭৪ মিটার। ভবনটির দ্বোতলার সিঁড়ি ব্যতীত মোট সাতটি কক্ষ রয়েছে। ভবনটির উত্তর দক্ষিণে একই মাপের প্রশস্ত বারান্দা, বারান্দার গোলাকৃতির জোরামাপের খাম ও উপরাংশে আছে অলংকরণ করা বড় মাপের দরজা, জানালা ও ছাদের ওপরে প্যারাপেট দেয়ালে পোড়ামাটির শিল্পকর্ম পর্যটক ও ভক্তদের বিশেষভাবে দৃষ্টি কাড়ে। ভবনটির জানালা দিয়ে চারপাশের মনোরম, মনোমুগ্ধকর পরিবেশ কবিগুরু উপলব্ধি করতেন। কাছারিবাড়িতে বসেই রবি কবি প্রাণভরে ছোট নদী দেখতেন ও শুনতেন ছোটনদীর স্রোতধারার মিশ্রিত সুর। 
শাহজাদপুরে এসে মানুষ ও প্রকৃতিকে গভীরভাবে ভালোবেসেছিলেন কবিগুরু। এখানে তিনি খুঁজে পেয়েছিলেন সাহিত্য সৃষ্টির দুর্লভ উপাদান। এখানে অবস্থানকালে তিনি রচনা করেন, সোনারতরী, বৈষ্ণব কবিতা, দুটি পাখি, আকাশের চাঁদ, পুরস্কার, যমুনা, হৃদয়, ভরা ভাদরে, প্রত্যাখ্যান ও লজ্জা, চিত্রা, শীত ও বসন্তে, নগর সংগীত, নদীযাত্রা, মৃত্যু মাধুরী, স্মৃতি বিলয়, প্রথম চুম্বন, শেষ চুম্বন, যাত্রী, তৃণ, ঐশ্বর্য, স্বার্থ, প্রেয়সী, শান্তিময়, কালিদাসের প্রতি, কুমার, মানসলোক, কাব্য প্রার্থনা, ইছামতী নদী, শুশ্রƒষা, অশিক্ষাগ্রহণ, বিদায়, নববিবাহ, রজ্জিতা, বিদায়, হত্যভাগ্যের গান, গতোনিক, বঞ্চনা, সংকোচ, মানসপ্রতিভা, রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা, ব্যবধান, তারাপ্রন্নের কীর্তি, ছুটি, সম্পত্তি, ক্ষুধিত পাষাণ, অতিথি ইত্যাদি।
এ ছাড়া কবিগুরু এখানে অবস্থান করে ৩৮টি বিভিন্ন ছিন্ন পত্রাবলী লিখেছেন। রবি কবি পঞ্চভূতের অংশবিশেষ ও নাটক বিসর্জন রচনা করেছিলেন এখানেই। শাহজাদপুরে নানা ফুলের গাছে ঘেরা কবিগুরুর অপরূপ কাছারি বাড়িট


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

Recent Posts

Recent Comments

No comments to show.