নিজস্ব প্রতিবেদক
আলীকদম কিন্ডারগার্টেন স্কুলের অধ্যক্ষ শামসুল আলম-সহ স্কুল পড়ুয়া দুই মেয়ে এবং স্ত্রীকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করার দায়ে চাচার বিরুদ্ধে আলীকদম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন শামসুল আলমের বড় মেয়ে শাহরিন জান্নাত।
অভিযোগপত্রে তার চাচা মঞ্জুর আলম, নজরুল ইসলাম, (৩৭), পিতা-সোনা মিয়া, ৩। মোঃ রিফাত (২২), পিতা-সিরাজ, ৪। মো: আবু তাহের (২৫), পিতা-মোঃ জয়নাল, সর্বসাং-খুইল্যা মিয়া চেয়ারম্যান পাড়া, সর্ব ০২নং ওয়ার্ড, ০১নং আলীকদম ইউপি, থানা-আলীকদম, জেলা-বান্দরবান সহ অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
এজাহারে উল্লেখ, বিবাদীর সাথে আমাদের বসতবাড়ীর জায়গা জমি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছে। বর্ণিত ০১নং বিবাদী আমাদের জায়গা দখল করার পায়তারা করলে আমার পিতা ০১নং বিবাদীর বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে উক্ত মামলা বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন আছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২৩/০৩/২০২৫ইং তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ০৬.৩০ ঘটিকার সময় আমাদের ঘরের ভিতর আমরা ইফতার শেষ করে ডাইনিং টেবিলে বসা অবস্থায় বর্ণিত বিবাদীগন সহ অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন বিবাদী হাতে দা, লোহার রড ও লাঠি-সোটা নিয়ে ঘরের ভিতরে একই উদ্দেশ্যে অনধিকার প্রবেশ করে আমার পিতাকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করে। তখন ০১নং বিবাদীর হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার পিতার মাথায় বারী মেরে গুরুত্বর রক্তাক্ত ফাটা জখম করে। বর্ণিত ০২নং বিবাদীর হাতে থাকা গাছের লাঠি দিয়ে আমার পিতার দুই হাতে বাহুতে ও ডান পায়ের পাঁজোরে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ফুলা জখম করে। বর্ণিত ০৩নং বিবাদীর হাতে থাকা ইলেকট্রিক ডিভাইস দ্বারা আমার পিতার দুই হাতে শক দেয়। বর্ণিত ০৪নং বিবাদী আমাদের ঘরের ভিতরে রক্ষিত প্লাস্টিকের জুতার র্যাক ভাংচুর করে অনুমান ৭৫০/-(সাতশত পঞ্চাশ) টাকা ক্ষতি সাধন করে। আমি ও আমার বোন নুরে জান্নাত ইরা (১৪) ও ইশরাত জান্নাত ইশা (১৮) সহ বিবাদীদের কবল হতে আমার পিতাকে উদ্ধার করতে গেলে বর্ণিত বিবাদীগন আমাদেরকে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে আমাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করে। বর্ণিত ০১ ও ০২নং বিবাদীদ্বয় সহ অজ্ঞাতনামা ০১ জন বিবাদী আমার ও আমার বোনদের কাপড়-চোপড় ধরে টানা হেছড়া সহ শ্লীলতাহানি করে। আমাদের ডাক চিৎকারে অন্য কক্ষে থাকা ০৬নং সাক্ষী আমার মামা সহ আশপাশে থাকা লোকজন ঘটনাস্থলে এগিয়ে আসলে বর্ণিত বিবাদীগন আমাদেরকে বিভিন্ন প্রকার হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরবর্তীতে আমার মামা লোকজনের সহযোগিতায় আমাদেরকে আহত অবস্থায় আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এসে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। আমার পিতার শারীরিক অবস্থা আশংকাজনক দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার পিতাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার্ড করে। রেফার্ডক্রমে আমার মা ও মামা আমার পিতাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান। বর্তমানে আমার পিতা কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। চিকিৎসা কাজে ব্যস্ত থাকায় এবং আমার আত্মীয় স্বজনের সাথে আলাপ-আলোচনা করে থানায় এসে এজাহার দায়ের করতে বিলম্ব হলো।
শাহরিন জান্নাত এই প্রতিবেদককে জানান, তার চাচা একজন মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক, তার বিরুদ্ধে অসংখ্য মাদক মামলা রয়েছে। সে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের ঘরবাড়ি দখল করার পায়তারা করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় সে লোকজন নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় আমাদের উপর হামলা চালায়। আমি এবং আমার পরিবারের সকলে এর সুষ্ঠু বিচার দাবী জানাচ্ছি।