আলীকদম সংবাদদাতা
বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় পারিবারিক বিরোধপূর্ণ যায়গায় দীর্ঘদিন ধরে আদালতে মামলা চলমান অবস্থায় জোরপূর্বক অবৈধ দখলের উদ্দেশ্যে একটি টিউবওয়েল বসানোকে কেন্দ্র করে দুই ভাইয়ের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।
এর ভিত্তিতে ছোট ভাইয়ের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা বাদী হয়ে আলীকদম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
একটি সূত্রে জানা যায়, আলীকদম সেনা জোন কতৃক পরিচালিত “আলীকদম কিন্ডারগার্টেন স্কুলের অধ্যক্ষ সামশুল আলম পৈতৃক ভিটায় মায়ের কাছ থেকে ১০(দশ) শতক জায়গা কিনেছে বলে একটি ভুয়া বায়না নামা তৈরি করেন। তার মাতা নিরক্ষর হওয়ায় এনআইডি কার্ড ও বয়স্কভাতার কার্ডে টিপসই থাকলেও উক্ত বায়না নামায় মায়ের স্বাক্ষর দেখা যায়। এতে উক্ত সম্পত্তির অন্যান্য ওয়ারিশগন এই বায়না নামা ভুয়া বলে চিহ্নিত করেন।
বায়না নামা রেকর্ডভূক্ত করতে বড় ভাই সামশুল আলম ২০২৩ সালে আদালতে ৩০৫/ডি/২০২৩ মিস মামলা করেন। পরবর্তীতে উক্ত বায়না নামা বাতিল করতে অন্যান্য ওয়ারিশগনের পক্ষ থেকে ছোট ভাই মঞ্জুর আলম বান্দরবান জজ কোর্টে ১৯১/২৩ অপর মামলা করেন। বর্তমানে উক্ত মামলা বান্দরবান জজ কোর্টে চলমান আছে।
সংঘটিত ঘটনা সম্পর্কে থানায় করা অভিযোগ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বড়ভাই সামশুল আলম সুপেয় পানির প্রয়োজনে উক্ত বিরোধপূর্ণ জায়গায় একটি টিউবওয়েল বসানোর জন্য উদ্যোগ নিলে পানির প্রয়োজনে ছোট ভাই মঞ্জুর আলম অনুুমতি দেন, তবে কোন প্রকার বাউন্ডারি নির্মান করতে নিষেধ করেছেন বলে জানান তিনি।
গত ২২ মার্চ সামশুল আলম চকরিয়া থেকে তার শশুর বাড়ির কয়েকজন নিকটাত্মীয়কে এনে সদ্য বসানো টিউবওয়েলটির চারপাশে ইটের বাউন্ডারি নির্মানের উদ্যোগ নিলে মঞ্জুর আলম বাধা দেন, এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বড় ভাই সামশুল আলম আলীকদম থানা থেকে এসআই হারুনকে নিয়ে আসলে ঘটনার আদ্যোপান্ত শুনে এএসআই হারুন তাদের কাজ আপাতত বন্ধ রেখে ২৩মার্চ সন্ধ্যার পর আলীকদম থানায় বৈঠকের প্রস্তাব দেন, এতে উভয় পক্ষের সম্মতি দিলে এসআই হারুন চলে যান।
এসময় এএসআই হারুন উক্ত ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সন্তোষ কেও উপস্থিত থাকার জন্য অবগত করেন।
২৩মার্চ সকালে মঞ্জুর আলম ব্যাক্তিগত কাজে জেলা সদরে অবস্থান করা কালীন সামশুল আলম আবারো ওয়াল নির্মাণ কাজ শুরু ও সম্পন্ন করে।
মঞ্জুর আলম বাড়িতে এসে বৈঠকে না বসে ওয়াল নির্মাণ সম্পর্কে জানতে চাইলে সামশুল আলম অতর্কিতে মঞ্জুর আলমকে উদ্দেশ্য করে একটি কাঠের দন্ড দিয়ে মাথায় আঘাত করে বলে জানান তিনি। ফেসবুকের বিভিন্ন আইডিতে পোস্টকৃত সামশুল আলমকে কারেন্ট শক দেয়ার কথা ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন তারা।
এলোপাতাড়ি আঘাতে এসময় তার সাথে থাকা খুইল্যা মিয়া পাড়ার বাসিন্দা নজরুল তাদের থামাতে গেলে সেও নাকে গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হন, (তারা উভয়ই বান্দরবান থেকে একসাথে এসেছেন)।
তবে ফেসবুকে পোষ্টকরা একটি ভিডিওতে সামশুল আলম জানান, ছোট ভাই মঞ্জুর আলম ও নজরুল তাকে রড দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করেছে, এসময় তিনি এসআই হারুন কর্তৃক নির্দেশিত নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার কথা স্বীকার করেছেন।
এব্যাপারে বড় ভাই সামশুল আলম বলেন, আমি ইফতার করে বাসায় অবস্থান করা কালীন আমার ছোট ভাই মঞ্জুর ও নজরুল অতর্কিত এসে লোহার রড় নিয়ে আমাদের উপর আক্রমণ করে আমাকে এবং আমার স্কুল পড়ুয়া দুই মেয়ে এবং আমার স্ত্রীকে গুরুতর জখম করে। আমাকে ইলেকট্রিক শক দিয়ে অজ্ঞান করে এলোপাতাড়ি পেটায়।
মঞ্জুর আলম ও অন্য ওয়ারিশ বোন ছফুরা বেগম বলেন, আমরা সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে এর সমাধান চাই।
বর্তমানে বড় ভাই সামশুল আলম আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রেপার নিয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানা যায়।